পৃথিবী জুড়ে ৫ বছরের কমবয়সী শিশু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ নিউমোনিয়া। শ্বাসতন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক সংক্রমণের ফলে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া প্রতিরোধযোগ্য। তারপরও বিশ্বে প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে ১ জন শিশু নিউমোনিয়াতে মারা যায়। বাংলাদেশেও প্রতিবছর ৫ বছরের কমবয়সী প্রায় ১২ হাজার শিশু নিউমোনিয়ার কারণে মারা যায়। বিগত একবছরেই ঢাকা শিশু হাসপাতালের মোট রোগীর ১৭ শতাংশই নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়। অথচ শুধুমাত্র নিয়ম মেনে শিশুকে টিকা প্রদান, ৬ মাস মাতৃদুগ্ধ পান করানো, এন্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার ও নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও নিরাপদ ধোঁয়ামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করলেই এ মৃত্যুহার একদমই কমিয়ে আনা সম্ভব।
A child dies of pneumonia every 39 seconds….
১২ই নভেম্বর ২০২০, প্রতিবছরের মত এবারও বাংলাদেশে শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করে এমন কিছু সংস্থাকে সাথে নিয়ে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস পালনের উদ্যোগ গ্রহন করে চাইল্ড হেলথ্ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল “প্রতিটি নিঃশ্বাস মূল্যবান, এখনই নিউমোনিয়া থামান” (Every breath counts, stop pneumonia now). দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করাই ছিল এবারের লক্ষ্য। নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতা এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইল্ড হেলথ্ রিসার্চ ফাউন্ডেশন নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল দেশের চারটি (০৪) হাসপাতাল (ঢাকা শিশু হাসপাতাল, কেরানীগঞ্জ উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্স, কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মির্জাপুর উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্স) ও একটি উপজেলা পরিষদ অফিসে (মির্জাপুর) ষ্টল স্থাপন। উক্ত ষ্টল সমূহ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মাধ্যমে নিউমোনিয়া রোগ ও এর প্রতিকার সম্পর্কিত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান, নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ ও প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এছাড়াও ঢাকা জেলা পরিষদ অফিস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর, এনজিও ব্যুরোসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিউমোনিয়া দিবসের লিফলেট বিতরণ, কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বিভিন্ন পর্যায়ে মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণার মাধ্যমে গণসচেতনতা তৈরি এবং বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষ্যে ইন্টারনাশনাল ভ্যাকসিন একসেস সেন্টার (আইভেক) আয়োজিত প্যানেল ডিসকাশনে অংশগ্রহণ করা হয়।
ঢাকা শিশু হাসপাতালে বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস কার্যক্রম উদ্বোধন করেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ শফি আহমেদ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মাকসুদা ইসলাম এবং শিশু হাসপাতাল ও চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা হেলথ্ কমপ্লেক্সে কার্যক্রমগুলো উদ্বোধন করেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এবং সিভিল সার্জন।
কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ ও ভাষাসৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দি। এসময় সিএইচআরএফ এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সমীর কুমার সাহা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, জামুর্কি এর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাকসুদা খানম, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বাবুল আক্তার।
মির্জাপুর উপজেলা পরিষদে কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ইউএনও আব্দুল মালেক। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ এবং ৫ টি ইনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।